
তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি :
কয়েকদিনের বৃষ্টিতে সিরাজগঞ্জের তাড়াশে ফসলের মাঠগুলোতে পানি জমে পাকা ধান নষ্ট হয়ে ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে কৃষকদের। বৃষ্টির পানিতে ডুবে যাওয়া ধান পচে চারা বের হচ্ছে কিছু জমিতে। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন উপজেলার চাষিরা। ফসল রক্ষায় অতিরিক্ত অর্থ খরচ করেও এই বৃষ্টিতে মিলছে না শ্রমিক। ফলে খেতেই পচে যাচ্ছে ধান।
তবে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় বোরো চাষের লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে ২২হাজার ৩১৫ হেক্টর। কিন্তু লক্ষমাত্রার চেয়ে অর্জিত হয়েছে ২২ হাজার ৩৬০ হেক্টর।
সরেজমিনে, উপজেলার দেশীগ্রাম ইউনিয়নের গুড়পিপুল, আড়ংগাইল, মাধাইনগর ইউনিয়নের ভাদাস, সেরাজপু, মালশিন, গুড়মা, তাড়াশ পৌর এলাকার কোহিত, আসানবাড়ি, বারুহাস ইউনিয়নের বিনসাড়া, বস্তুলসহ বিভিন্ন গ্রামের ফসলি মাঠে বৃষ্টির পানিতে ডুবে গেছে ধান। অনেক খেতে ধান পচে গিয়ে চারা বের হয়ে গেছে।
কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এ বছর এক বিঘা জমিতে বোরো ধান চাষ করতে সব মিলিয়ে খরচ হয়েছে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা। বর্তমানে শ্রমিক খরচ আরও প্রায় ৭ হাজার টাকা বেড়ে ৯ হাজারে ঠেকছে। তাদের অভিযোগ অপরিকল্পিতভাবে ব্রিজ-কালভাটের, বন্ধ খাল-নালা বন্ধ করে দেয়ার ফলে পানি নিস্কাশন হয়না। তাই বৃষ্টি হলে পানি নিস্কাশনের বাধাগ্রস্ত হয়। এতে ফসলি মাঠগুলো ডুবে কৃষকের সর্বনাশ হচ্ছে প্রতিবছর।
শিক্ষক আজাদ বলেন, কৃষকের পাকাধান পানির নিচে হাবুডুবু খাচ্ছে। শ্রমিকের সাথে অর্ধেক ভাগেও শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। অবিরাম বৃষ্টি, কৃষকদের সর্বনাশ, কিছু নেতার কপালে আসলো পৌষ মাস। তিনি অরওা জানান, পাবনা অঞ্চল থেকে কৃষি শ্রমিকেরা তাড়াশ উপজেলার বিভিন্ন গৃহস্থের বাড়ি থেকে ধান কাটতেন কিন্ত এবছর তারা অজ্ঞাত কারণে এখনো অধিকাংশ গৃহস্তের বাড়িতে আসেননি। তাই শ্রমিক সংকট দেখা দেয়ার কারণও একটি।
শ্রমিক মহির উদ্দিন বলেন, হঠাৎ বৃষ্টি হওয়ায় মাঠের ধানগুলো পানিতে ডুবে গেছে। এখন প্রতি বিঘা জমিতে চার থেকে পাঁচজন শ্রমিক বেশি লাগবে। আগে যেখানে এক বিঘা জমিতে খরচ হতো ৩ হাজার থেকে ৪ হাজার টাকা, সেখানে এখন অতিরিক্ত খরচসহ প্রায় ৭ হাজার থেকে ৯ হাজার টাকা। শুধু তাই কিছু এলাকায় অর্ধেক জমিওয়ালার অর্ধেক শ্রমিকের তবুও শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না
কৃষি কর্মকর্তা লুৎফুন নাহার লুনা বলেন, চলতি বোরো মৌসুমের শুরু থেকে কৃষি বিভাগের মাঠকর্মীসহ সব স্তরের কর্মকর্তারা কৃষকদের নানা দিকনির্দেশনা দিয়ে কৃষকদের উৎসাহিত করেছেন। মাঠের শ্রমিক সংকটের কারণে ধান কাটা নিয়ে কৃষকরা একটু সমস্যায় পড়েছেন।